রবিবার, ২৯ মে ২০২২, ০৪:৫৬ পূর্বাহ্ন
কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গানের সেই লাইন ‘ও আমার দেশের মাটি তোমার ’পরে ঠেকাই মাথা।’ বিশ্ব কবির মতো আমিও আমার দেশের প্রতি কৃতজ্ঞচিত্তে চিরঋণী। এই ঋণের সূচনা হয়েছে মাতৃগর্ভ থেকেই। মায়ের জঠরে তিলতিল করে বেড়ে ওঠার সময় পেয়েছিলাম আমার দেশমাতৃকার বায়ুবাহিত অক্সিজেন। মাতৃগর্ভে বেড়ে উঠেছি মায়ের সঞ্জীবনী শক্তির নির্যাস আস্বাদনে, যা আমার মা পেয়েছিলেন এ দেশের মাটিতে উত্পাদিত খাদ্যশস্য থেকে। স্কুলে পড়েছি বিনা পয়সায়, এমনকি মাধ্যমিক স্কুলে পড়ার সময় ৫ টাকা বেতনের মধ্যেই সিঙ্গারা বা গজার মতো মজার টিফিন দেওয়া হতো আমাদেরকে। সব সময় মনে পড়ে এদেশের পারিবারিক বন্ধনে ভাইবোন, মা-বাবা কীভাবে আমাদের জীবনের নানান সংকটে পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন। আমি গর্বিত এদেশে জন্মগ্রহণ করে। এমন একটি সুন্দর দেশের জন্য নববর্ষের শুরুতে কিছু শুভ প্রত্যাশা করতেই পারি।
নতুন বছর মানেই নতুন প্রাণের স্পন্দন, নতুন প্রত্যাশা, নতুন সম্ভাবনা। গেল বছরের সব কিছুকে পেছনে ফেলে নতুন বছরে অমিত সম্ভাবনার পথে শুধুই এগিয়ে চলা। এই বছরের সবচেয়ে বড় প্রত্যাশা, সারা পৃথিবী হোক করোনামুক্ত। মা ষোল বছর হলো গত হয়েছেন। দেশকে মায়ের আসনেই অধিষ্ঠিত করেছি। এদেশকে আমি দেখি সম্ভাবনার সমুজ্জ্বল ক্ষেত্র হিসেবে। এই সম্ভাবনা বিকাশে নতুন বছরের প্রাক্কালে সবার কাছে আমার প্রত্যাশা হলো আমাদের সুন্দর মানুষ হিসেবে গড়ে ওঠার নেপথ্যে দেশের যে অবদান তা কৃতজ্ঞ চিত্তে স্মরণ করা। আমি বিশ্বাস করি, দেশের প্রতি কৃতজ্ঞ মানুষ কখনো জ্ঞাতসারে দেশের ক্ষতি করতে পারেন না। তাদের হাত ধরেই দেশ এগিয়ে চলে দুর্বার গতিতে। নতুন বছরের প্রাক্কালে আমরা হবো ত্যাগের মন্ত্রে দীক্ষিত। বিশ্বের চারদিকে দৃষ্টি প্রসারিত করি, দেখব ভোগবাদী যে কোনো দেশ বা জাতিরই পতন ঘটেছে। কোনো সৃষ্টির পেছনে রয়েছে কারো না কারো নিঃস্বার্থ অবদান ও আত্মত্যাগ। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তার পঞ্চান্ন বছরের জীবনে বারো বছরের বেশি সময় অন্তরীণ থেকেছেন কারাগারে। তার ধ্যান-জ্ঞান ছিল আন্দোলন-সংগ্রামের মাধ্যমে এদেশের নির্যাতিত ও শোষিত মানুষের অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক মুক্তি। তিনি যদি তত্কালীন পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর সঙ্গে সমঝোতা করতেন বা লোভ ও ভোগের হাতছানিতে নিজের সত্তাকে হারিয়ে ফেলতেন তাহলে আমরা স্বাধীন দেশ পেতাম না।